গভীর নিম্নচাপ অতিক্রম করছে বাংলাদেশের উপকূল
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে গভীর নিম্নচাপ । এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নিম্নচাপটি খেপুপাড়া–সাগরদ্বীপ অঞ্চল দিয়ে ঢুকেছে । এটি আরও উত্তর দিকে এগিয়ে গেলে আজ রাতেই এর প্রভাব কমতে পারে।
এর ফলে উপকূলীয় ও দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে ১৪টি জেলা এখন হুঁশিয়ারির মুখে।
গভীর নিম্নচাপের গতি ও প্রভাব: কোথায় কী ঘটছে?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে গঠিত গভীর নিম্নচাপটি এখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া অঞ্চলের কাছাকাছি এসে গেছে।
নিম্নচাপের কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটার এলাকায় ঘণ্টায় ৫০ কিমি বাতাস বইছে। ঝোড়ো হাওয়া এমনকি ৬০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে । এর প্রভাবে সাগর এখন অস্থিতিশীল ও উত্তাল ।
কোন কোন জেলায় সতর্কতা?
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই নিম্নচাপের প্রভাবে নিম্নলিখিত ১৪টি জেলায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা :
- চট্টগ্রাম
- কক্সবাজার
- নোয়াখালী
- লক্ষ্মীপুর
- ফেনী
- চাঁদপুর
- ভোলা
- হাতিয়া
- সন্দ্বীপ
- বরগুনা
- পটুয়াখালী
- বরিশাল
- পিরোজপুর
- ঝালকাঠি
এছাড়াও উপকূলীয় জেলার সংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলোতেও বিপদজনক জলোচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে।
জলোচ্ছ্বাস কতটা ভয়ংকর হতে পারে?
নিম্নচাপের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে ২ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত । এর ফলে নিম্নভূমি ও সমুদ্রসংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঝোড়ো হাওয়ার প্রভাবে সমুদ্র বন্দরগুলোতেও চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখানো হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, নিম্নচাপ আরও উত্তর দিকে এগিয়ে গেলে আজ সন্ধ্যা নাগাদ এটি উপকূল অতিক্রম করে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে পারে ।
তবু বাসিন্দাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে আগামী দিনগুলোতে?
গভীর নিম্নচাপ আগামী দিনগুলোতে ভারতের উত্তর বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে সরে যেতে পারে। এর সঙ্গে অমাবস্যার প্রভাবও যুক্ত হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে ।
এই পরিস্থিতিতে দ্বীপ ও চরবাসীদের জন্য বিপদ নির্দেশক সংকেত ইতিমধ্যে বাংলাদেশ মহাসড়কে প্রদর্শন করা হয়েছে ।
কী পরামর্শ দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ?
- সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ।
- দ্বীপ ও চরের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে।
- নৌযানের মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে।
- জলোচ্ছ্বাসের কারণে নিম্নভূমি থেকে সরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।