ভারত প্রস্তুত, বাংলাদেশকে অবৈধ নাগরিকদের সনাক্ত করতে হবে
ভারত জানিয়েছে, দেশটি বর্তমানে ২,৩৬৯ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত । এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশকে এই নাগরিকদের সনাক্ত করতে হবে, যাতে তাঁদের ফেরত পাঠানো যায়।
এই ঘোষণা আসে এমন সময় যখন ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত থেকে বাংলাদেশে নাগরিকদের “পুশ ইন” করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকেই রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচয় দিলেও, ভারত মনে করে অনেকেই বাংলাদেশি নাগরিক।
বাংলাদেশের কাছে অনুরোধ: দ্রুত সনাক্ত করুন নাগরিকদের
রণধীর জয়সোয়াল বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে বলেছি যে অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানকারী নাগরিকদের সনাক্ত করার বিষয়টি দ্রুত সমাধান করুন। আমাদের কাছে মোট ২,৩৬৯ বাংলাদেশি নাগরিকের তালিকা রয়েছে, যাঁদের ফেরত পাঠানো প্রয়োজন।”
এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন মামলায় জেল খেটেছেন। এখন তাঁদের শাস্তি শেষ হয়েছে এবং তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের অপেক্ষা চলছে ২০২০ সাল থেকে , অর্থাৎ পাঁচ বছর পার হয়ে গেছে!
ভারতের অবস্থান: অবৈধ বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাঁরা অবৈধভাবে দেশে অবস্থান করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এটি শুধু বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য নয়, বরং যে কোনো দেশের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য।
অবৈধ বসবাসকারীদের মধ্যে বহু বাংলাদেশি ফেরত যেতে অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে তাঁদের নাগরিকত্ব যাচাইয়ের বিষয়টি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের পাল্টা: ভারতকে অবৈধ ‘পুশ ইন’ বন্ধ করতে অনুরোধ
উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে লোকজনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এঁদের মধ্যে অনেকেই রোহিঙ্গা। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশ একাধিকবার ভারতকে চিঠি দিয়েছে, এই প্রথা বন্ধ করতে। তবে ভারত এখন বলছে, এই নাগরিকদের ফেরত নেওয়া বাংলাদেশের দায়িত্ব।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের মুখে জয়সোয়ালের জবাব
আজকের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক ভারতের কাছে এ বিষয়ে অফিসিয়াল অবস্থান জানতে চান। তার জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে বলেছি, তাঁদের নাগরিকদের সনাক্ত করুন। আমাদের কাছে প্রস্তুত রয়েছে ২,৩৬৯ জনের তালিকা। এঁদের ফেরত পাঠানোর জন্য প্রক্রিয়া শুরু করুন।”
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ?
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কোনো দ্রুত প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বাংলাদেশ মনে করে, এ ধরনের প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষা করা প্রয়োজন। এছাড়াও ভারতের পুশ ইন পদ্ধতি মানবতাবিরোধী হওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
কক্সবাজারে মার্কিন মহড়া নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মহড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়সোয়াল বলেন, “ভারত সব ঘটনার ওপরে তীক্ষ্ণ নজর রাখে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।”
এ কথা থেকে বোঝা যায়, ভারত বাংলাদেশে বৈদেশিক সামরিক উপস্থিতি নিয়ে সতর্ক। তবে কূটনৈতিক ভাষায় তাঁরা সংযত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
সংক্ষেপে: কী হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপ?
দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হতে পারে খুব শিগগিরই।
ভারত প্রস্তুত, বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে।
বাংলাদেশকে সনাক্ত করতে হবে নাগরিকদের।
ভারতের সীমান্ত থেকে নাগরিকদের পুশ ইন চলছে।
বাংলাদেশ এর নিন্দা করেছে।