Sarjis Alam Against Jatiyo Party
WhatsApp
WhatsApp Channel
Join Now
Telegram Telegram Channel Join Now

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে একটি ‘স্পষ্ট অবস্থান এবং কার্যক্রম’ দেখতে চান তিনি ও তাঁর দলের সমর্থকেরা।

পোস্টের মূল বিষয়বস্তু ও অভিযোগ:
সারজিস আলম তাঁর পোস্টে জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ‘পতিত আওয়ামী লীগের বি-টিম’ হিসেবে অভিহিত করে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টিকে স্বাভাবিক বললেও, তাঁর মূল আপত্তির জায়গা ছিল ঘটনার প্রেক্ষাপট এবং অন্যান্য গুরুতর অভিযোগের প্রতি কর্তৃপক্ষের আপাত উপেক্ষা।

তাঁর ভাষ্যমতে, রংপুরে জাতীয় পার্টির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহরে একটি মিছিল করেন, যা উত্তেজনার সৃষ্টি করে। সারজিস আলমের অভিযোগ, জাতীয় পার্টি অতীতে আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছে, বিশেষ করে যখন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন বর্জন করেছিল।

তিনি আরও দাবি করেন, জি এম কাদের রংপুরে এসে স্থানীয় জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে বৈঠক করে পরিস্থিতিকে আরও উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য’-এর পক্ষ থেকে জি এম কাদের ও জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে একটি অহিংস বিক্ষোভ মিছিল বের করা হলে, জাতীয় পার্টির কর্মীরা প্রথমে সেই মিছিলে হামলা চালায় বলে তিনি অভিযোগ করেন। এই ঘটনার পর জি এম কাদেরের বাড়িতে একটি মোটরসাইকেল পোড়ানোর ঘটনা ঘটে, যাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে এবং বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্থানীয় নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন:
সারজিস আলম তাঁর পোস্টে প্রশ্ন রাখেন, জি এম কাদেরের বাড়িতে ‘সামান্য আগুন’ ও একটি ‘পুরানো বাইক’ পোড়ানোর ঘটনায় যে তৎপরতা দেখানো হয়েছে, সেই একই তৎপরতা গত নয় মাসে আওয়ামী লীগের অভিযুক্ত নেতা-কর্মী বা ‘খুনিদের’ গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে দেখা গেছে কিনা। তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন:

  • সাবেক মেয়র মোস্তফার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে বা তাঁকে গ্রেপ্তারে কয়টি অভিযান চালানো হয়েছে?
  • রংপুরে আওয়ামী লীগের কথিত দখলদারদের কাছ থেকে জনগণের সম্পদ উদ্ধারে কয়টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে?
  • ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যের’ মিছিলে হামলাকারী এবং পরিস্থিতি উত্তপ্তকারী জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

সেনাবাহিনীর প্রতি বার্তা:
পোস্টের শেষে সারজিস আলম উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আমরা এখনো যথেষ্ট সম্মানের জায়গায় রাখি। কিন্তু ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে তাদেরও স্পষ্ট অবস্থান এবং কার্যক্রম আমরা দেখতে চাই।” তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন যে, “নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাদেরই বি-টিম জাতীয় পার্টি রূপে ফিরে আসার চেষ্টা করলে সেই চেষ্টাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করা হবে।”

সারজিস আলমের এই বক্তব্য দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিশেষত সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাঁর উত্থাপিত প্রশ্নগুলো এবং প্রত্যাশা বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। 🇧🇩⚖️

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *