সংস্কার বাধাগ্রস্ত করতে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যু’র চেষ্টা – এনসিপির অভিযোগ
WhatsApp
WhatsApp Channel
Join Now
Telegram Telegram Channel Join Now

সংস্কার বাধাগ্রস্ত করতেই সচিবালয়ে আন্দোলন – এনসিপির অভিযোগ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জোরদার ভঙ্গিতে অভিযোগ করেছে, সচিবালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে চলমান আন্দোলনের পিছনে কোনো সাধারণ দাবি নয়—বরং এটি হতে পারে একটি ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যু’ বা প্রশাসনিক অপসারণের ষড়যন্ত্র!

দলটির নেতারা বলছেন, এর পিছনে ফ্যাসিবাদী শক্তি বা বড় রাজনৈতিক দলের হাতও থাকতে পারে। এ কারণেই তাঁরা আন্দোলনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।


“ফ্যাসিবাদের দোসরদের আন্দোলন” – এনসিপি নেতাদের মন্তব্য

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেছেন, “সরকারি চাকরিজীবীদের আন্দোলনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের হাত থাকতে পারে। আবার সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া কিছু মহলও থাকতে পারে।”

তবে দলীয়ভাবে এখনো কোনো মন্তব্য করার কথা ভাবেনি এনসিপি। তবু এর প্রতি তাঁদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে।


জুলাই বিপ্লবী ছাত্র-জনতার গণসমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা

‘জুলাই বিপ্লবী ছাত্র-জনতা’ আজ ঢাকায় গণসমাবেশ ডেকেছে। সচিবালয়ের সংস্কারবিরোধী আমলাদের অপসারণ এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের দাবি তুলে এই কর্মসূচি। এনসিপির কয়েকজন নেতা ব্যক্তিগতভাবে এর সংহতি জানিয়েছেন।

আরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা এই সংহতি জানানোকে ইতিবাচকভাবে দেখছি।”


সংস্কার আইনে জবাবদিহি বাধ্যতামূলক হলে আমলাদের ভয় – এনসিপির দাবি

সরকারি চাকরি (সংশোধিত) অধ্যাদেশ-২০২৫ বাস্তবায়নের ফলে আমলাদের জবাবদিহি করতে হবে এবং দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি যেতে পারে, এমন মনে করছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার।

তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, “দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ থাকলে আমলাদের চাকরি যাবে—এই সংস্কার প্রস্তাবের কারণেই সচিবালয় অচল করে দেওয়া হয়েছে।”


“নতুন আইনের মাধ্যমেই বরখাস্ত করুন আন্দোলনকারীদের” – সারোয়ার তুষারের দাবি

সারোয়ার তুষার আরও বলেছেন, “যারা এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, তাঁদের বরখাস্ত করে নতুন নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমলাদের আন্দোলনের পেছনে কারা কারা ইন্ধন জুগিয়েছে, সেটি গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জনসম্মুখে আনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।”


হাসনাত আবদুল্লাহর হুঁশিয়ারি: “জনগণ আপনাদের বিকল্প খুঁজে নেবে!”

চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, “সচিবালয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। তাঁরা যেন ভুলে না যান, ৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে তাঁদের আর দালালি করা চলবে না!”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “জনগণ আপনাদের বিকল্প খুঁজে নেবে, যদি সংস্কারে বাধা দেন।”


“৫ আগস্টের আগে হাসিনা বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন আপনারা” – হাসনাতের আরও মন্তব্য

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেছেন, “জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে আপনারা কালো ব্যাজ পরে শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু এখন অফিস চলতে দেবেন না বলে হুমকি দিচ্ছেন। কেউ কি ভেবেছেন, এখন আপনাদের কথা কেউ শুনবে?”

তিনি আরও বলেন, “সংস্কারে বাধা দিলে জনগণ কঠোর হাতে প্রতিরোধ করবেন।”


হাসনাতের ফেসবুক পোস্টে হুঁশিয়ারি: “সচিবালয়ে ক্যু হচ্ছে কি?”

হাসনাত তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “সচিবালয়ের ক্যু সম্পর্কে সচেতন থাকুন। জনগণ সব কিছু লক্ষ করছে। সুতরাং, সাবধান!


আবদুল হান্নানের কড়া মন্তব্য: “দুর্নীতির স্বাধীনতা আর নয়!”

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ ফেসবুকে লিখেছেন, “সচিবালয়, এনবিআর বা পোর্টে যাঁরা স্ট্রাইক করছেন, তাঁদের বলছি—বিপ্লব ওখানেও হবে!”

তিনি আরও বলেছেন, “আপনারা দুর্নীতির স্বাধীনতা চাচ্ছেন, কিন্তু ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে সেটা আর পাবেন না। হাসিনা শাসনামলের গুম, খুন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সহযোগী হওয়ায় আপনারা এখন বিচারের মুখে। ভাববেন না, পার পেয়ে গেছেন!”


নতুন অধ্যাদেশের পক্ষে এনসিপির সমর্থন

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, “নতুন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ আমাদের কাছে ভালো লেগেছে। আমরা দলীয়ভাবে এটির পক্ষে দাঁড়িয়েছি।”

তিনি আরও বলেছেন, “একসঙ্গে এত আন্দোলন – কি এটা ‘সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যু’ হতে পারে? এখন সেই সন্দেহ তৈরি হচ্ছে।”


সচিবালয়ে আন্দোলন জারি – কোন দাবি তুলে ধরছেন কর্মচারীরা?

গতকাল সচিবালয়ের ভেতরে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। সরকারি চাকরি সংশোধনী অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে এই আন্দোলন। এ ছাড়া আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ দুই দিনের কলমবিরতি ডেকেছে।

অন্যদিকে, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধেছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে দেওয়ার বিরুদ্ধেও আন্দোলন চলছে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *