ইরানের পারমাণবিক সুবিধাগুলোতে মার্কিন সামরিক আঘাতের পাল্টা হিসেবে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এ প্রণালী বিশ্বের প্রায় ২০% তেল ও গ্যাসের পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ হুমকি আন্তর্জাতিক শক্তি বাজারে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
ইরানের পার্লামেন্ট এই পদক্ষেপ অনুমোদন করেছে বলে জানা গেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদের। ইসমাইল কোসারি, ইসলামি বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার ও সাংসদ, জানিয়েছেন, “হরমুজ প্রণালী বন্ধ করা এখন আমাদের এজেন্ডায় রয়েছে। প্রয়োজনেই এটি কার্যকর করা হবে।”
🌍 শক্তি বাজারে আতঙ্ক
ইসরায়েলের জুনের ১৩ তারিখে ইরানের বিরুদ্ধে হঠাৎ বোমা হামলার পর থেকে বিশ্ব শক্তি বাজারে উত্তেজনা বাড়ছে। মার্কিন সংযুক্তি এবং হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল পরিবহনের বিপন্নতা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম জুনের ১৩ তারিখের পর থেকে ১০% বেড়েছে। এখন এটি ব্যারেল প্রতি ৭৭ ডলারের বেশি।
🔁 ট্যাঙ্কার যুদ্ধের পুনাবৃত্তি?
এই পরিস্থিতি ১৯৮০-এর দশকের ‘ট্যাঙ্কার যুদ্ধ’-এর পুনাবৃত্তি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন ইরান ও ইরাকের সংঘর্ষের সময় দুই দেশই পারস্য উপসাগরে তেল ট্যাঙ্কারে হামলা করেছিল। ইরান সৌদি ও কুয়েতের জাহাজ এমনকি মার্কিন নৌবহরকেও লক্ষ্য করেছিল।
১৯৮৭ সালে রিগান প্রশাসন অপারেশন আর্নেস্ট উইল চালিয়েছিল। মার্কিন নৌবাহিনী তেল ট্যাঙ্কারের নিরাপত্তা দিত। কিন্তু ১৯৮৮ সালে এক মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ভুল করে ইরান এয়ার ফ্লাইট ৬৫৫ ভেঙে দেয়, যাতে ২৯০ জনের মৃত্যু হয়।
🚢 মার্সকের প্রতিক্রিয়া
ডেনমার্কের জাহাজ পরিবহন প্রতিষ্ঠান মার্সক জানিয়েছে, হরমুজ প্রণালী দিয়ে তাদের জাহাজগুলো এখনো চলছে। তবে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে তারা প্রয়োজনে পদক্ষেপ নেবে।
“আমরা এলাকায় আমাদের জাহাজগুলোর নিরাপত্তা নিয়মিত মূল্যায়ন করছি এবং প্রয়োজনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত,” প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে।
🌐 বিশ্বের কাছে জরুরি বিষয়
হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে এশিয়া, ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় অর্থনীতির শক্তি নিরাপত্তা বিপন্ন হবে। পশ্চিমা কূটনীতিবিদরা আত্মসংযম ও কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন, কিন্তু পরিস্থিতি এখনো অস্থিতিশীল।