ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজের এক পাশের চাকা খুলে পড়লেও সফলভাবে জরুরি অবতরণ করলেন পাইলট; প্রশ্ন উঠছে রক্ষণাবেক্ষণ ও গাফিলতি নিয়ে
মূল প্রতিবেদন:
আজ শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৪৩৬ ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য মুহূর্তটা ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। উড়োজাহাজটি আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পেছনের এক পাশের একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়। কিন্তু পাইলটের সততা, সাহস ও নিখুঁত দক্ষতায় শেষ পর্যন্ত উড়োজাহাজটি নিরাপদে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে সক্ষম হয়। উড়োজাহাজটিতে শিশুসহ মোট ৭১ জন যাত্রী ছিলেন, যারা সবাই নিরাপদে রয়েছেন।
যে উড়োজাহাজটির চাকা খুলে পড়ে যায়, সেটি ছিল ড্যাশ ৮-৪০০ মডেলের একটি স্বল্পপাল্লার টার্বোপ্রপ প্লেন, যা কানাডায় তৈরি এবং সাধারণত অভ্যন্তরীণ রুটে ব্যবহৃত হয়। বিজি ৪৩৬ ফ্লাইটটি দুপুর ১টা ২০ মিনিটে কক্সবাজার ছাড়ে এবং ঠিক এক ঘণ্টা পর জরুরি অবতরণ করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উড়োজাহাজের এক পাশে চাকা না থাকলে ভারসাম্য রক্ষা করে অবতরণ করানো অত্যন্ত জটিল এবং বিপজ্জনক। এ ধরনের সংকটজনক পরিস্থিতিতে কন্ট্রোল টাওয়ারকে সতর্ক করে রানওয়েতে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও নিরাপত্তা বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়। সেই সঙ্গে পাইলট যাত্রীদের সাহস জোগান এবং মানসিক চাপ সামাল দেন।
এই ফ্লাইটের পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন বিল্লাহ ও ফার্স্ট অফিসার জায়েদ। বিমানের ফেসবুক পেজে তাঁদের প্রশংসা করে পোস্ট দেওয়া হয়েছে। তবে একই সঙ্গে এই ঘটনা ঘিরে উঠেছে প্রশ্ন—বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে।
অনেকে মনে করছেন এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি গাফিলতির ফল। বিমানের প্রকৌশল বিভাগ, যারা সম্প্রতি সুবিধা ও বয়সসীমা বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন, তাঁদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এখন প্রকাশ পাচ্ছে। বিমানের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, ৫ আগস্টের পর পুরো দেশে আমূল পরিবর্তন হলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে সংস্কারের কোনো লক্ষণ নেই।
এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “এই ঘটনা শুধু যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, এটা নেতৃত্বের সংকট, দায়িত্বশীলতার অভাব এবং ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার প্রতিফলন।”