জাতিসংঘের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। বিশেষ করে, যে পাকিস্তানকে ভারত দীর্ঘদিন ধরে ‘সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা’ হিসেবে অভিযুক্ত করে আসছে, সেই পাকিস্তানই এখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস দমন কমিটিতে সহ-সভাপতিত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছে! এই ঘটনায় নয়াদিল্লির অস্বস্তি চরমে পৌঁছেছে বলে জানাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা। 😠🌍
কোন কমিটিতে কী দায়িত্ব পেল পাকিস্তান?
- সন্ত্রাস দমন কমিটি: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে চলতি বছর সহ-সভাপতিত্ব করবে পাকিস্তান। এই কমিটির সভাপতিত্ব করবে আলজেরিয়া, এবং পাকিস্তানের সাথে রাশিয়া ও ফ্রান্সও সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকবে।
- আফগান তালেবান নিষেধাজ্ঞা কমিটি: আফগানিস্তানের তালেবানের উপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে এবার সভাপতিত্ব করতে চলেছে পাকিস্তান। এই কমিটিতে গায়ানা ও রাশিয়া সহ-সভাপতির ভূমিকা পালন করবে।
ভারতের উদ্বেগের কারণ:
ভারত দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে। বিশেষ করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (সম্ভাব্য কাল্পনিক বা নির্দিষ্ট কোনো অপারেশনের নাম, মূল আর্টিকেলে এর বিস্তারিত নেই) পরবর্তী সময়ে এই অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে, যে দেশটিকে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দেখা হয়, সেই দেশের হাতেই সন্ত্রাস দমনের মতো কমিটির দায়িত্বভার তুলে দেওয়ায় ভারত স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন। 🤔
জাতিসংঘের নিয়ম ও বাস্তবতা:
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু ও ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র (যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) রয়েছে। বাকি ১০টি রাষ্ট্র দুই বছরের জন্য অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়। পাকিস্তান বর্তমানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এমনই একটি অস্থায়ী সদস্য, যাদের মেয়াদ ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে থাকা বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়াই জাতিসংঘের প্রচলিত রীতি। সেই নিয়ম অনুসারেই, আইএসআইএল এবং আল-কায়েদার উপর নিষেধাজ্ঞা কমিটিতে যেমন ডেনমার্ক সভাপতিত্ব করছে (রাশিয়া ও সিয়েরা লিওন সহ-সভাপতি), তেমনি পাকিস্তানও দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির দায়িত্ব পেয়েছে।
তবে, নিয়ম যাই হোক না কেন, চিরবৈরী পাকিস্তানের এমন উত্থান ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে একটি বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, এই নতুন পরিস্থিতিতে ভারত কীভাবে তাদের কৌশল নির্ধারণ করে।