বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাছারি বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভারত। এই ‘জঘন্য’ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে দেশটি। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য বাংলাদেশকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে ভারত। 🏛️🔥
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর বার্তা:
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “দুঃখের বিষয়, এমন ঘটনা বারবার ঘটে চলেছে।” তিনি এই হামলাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্তর্ভুক্তিমূলক দর্শন ও শিক্ষার পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন। জয়সোয়ালের মতে, “উগ্রপন্থীরা বাংলাদেশের সহনশীলতা ও সমন্বয়মূলক সংস্কৃতির প্রতীকগুলো যেভাবে পরিকল্পিত উপায়ে ধ্বংস করে চলেছে, এই আক্রমণ তারই অংশ।” তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, এই ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
ড. ইউনূসের মন্তব্য ও ভারতের অবস্থান:
ব্রিফিংয়ে লন্ডন সফররত বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের একটি মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় ও তাঁর রাজনৈতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছিলেন শেখ হাসিনার মন্তব্যে রাশ টানতে। উত্তরে মোদি জানিয়েছিলেন, তাঁরা সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এই প্রসঙ্গে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত কেমন সম্পর্ক চায়, সে কথা আমি এই মঞ্চ থেকে বারবার বলেছি। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক তৈরি করতে চায়। দুই দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষাও তা–ই।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিল্লি সফর প্রসঙ্গে:
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঈদ উপলক্ষে দিল্লি সফরের খবর প্রকাশিত হয়। এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে জয়সোয়াল জানান, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই এবং খবরটির সত্যতা সম্পর্কেও তিনি অবগত নন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনায় এই ধরনের হামলা নিঃসন্দেহে দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের এই কড়া প্রতিক্রিয়া এবং ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়। 🇧🇩🇮🇳